অধ্যাপক মোঃ সুরুজ্জামান.. অতিথি লেখক ও উপদেষ্টা, সাপ্তাহিক বকশীগঞ্জ
সময়ের তালে তাল মিলিয়ে চলে রাজনীতিও। এর গতিপথ কখনও মসৃন। আবার কখনও অমসৃন। রাজনীতির গতি ও প্রকৃতি সময়ে ফেরে বদলায়। আজ যে মানুষটি ক্ষমতার চেয়ারে বসে আছে, কাল যে সে রাজপথে আসবে না তার কি গ্যারান্টি আছে?
নেই। তারপরও আমরা যাঁরা রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এ সত্যটি অনেক সময়ই ভুলে যাই। সেই সাথে আমরা কিছু মানুষ ভুলে যাই, ক্ষমতার চেয়ারে বসতে দলের সেই সকল কর্মি-সমর্থক ও শুভাকাংখীদের, যাঁরা সিঁড়ি হয়ে দলকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চেয়ারে নিয়ে যায়! এটি বাংলাদেশের রাজনীতির বাস্তব চিত্রের একটি দিক। আর এই দিকটির কুফলের খেসারতের পুরোটাই দিতে হয় দলকে। দলের পুরোধা এই বিষয়ে সর্তক না হলে সে খেসারতের দায়ভার তাঁকেও নিতে হয়। এ রকম উদাহরন এ দেশের রাজনীতিতে দুস্প্রাপ্য নয়!
নিকট অতীতে বিএনপি’র নেতাদের অনেকেরই নানা অপকর্মের দায়ভার মাথায় নিয়ে সে দলের পুরোধা আজ জেলে। এটি হয়েছে সে দলের পুরোধা’র প্রশ্রয় ও সতর্কতার অভাবের জন্য। আসলে নিজেকেও তিনি কন্ট্রোল করেননি। যেভাবেই হোক তিনিও অনিয়মের প্রতি দূর্বল ছিলেন। খেসারত তিনি দিচ্ছেন।সুদূর অতীতে হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদও খেসারত দিয়েছেন। এখনও তিনি সেটির জের টানছেন। এদিক থেকে আওয়ামী লীগ পুরোধা খুবই সতর্ক। কোন রকম লোভ লালসা তাঁকে ছুঁতে পারেনি। তৃণমূলের নেতা- কর্মিদের তিনি দলের অপরিহার্য় অংশ মনে করেন। আল্লাহ আর তৃণমূলই তাঁর ভরসা। নেতাদের কারণে যতটুকু ঘাটতি হয়েছে , তৃণমূলের ভালবাসায় তিনি সেটুকু পূরণ করার ভরসা রাখেন। তৃণমূলও শুধু তাঁকেই মানে। প্রাসঙ্গিকদের উপর জননেত্রী শেখ হাসিনার ভরসা নেই। তিনি জানেন দলের সকল অসঙ্গতিই এঁদের ভুলে সৃষ্টি হয়েছে। এবার
তিনি খুবই সজাগ। এটিই তাঁকে আগামীতেও ক্ষমতায় নিয়ে যাবে।
গণভবণে পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তিনি বলেছেন-” জনগণ চাইলে ক্ষমতায় যাব, না চাইলে যাব না।” এ সত্য ভাষণ কি ইঙ্গিত দিচ্ছে? এটি দেশ ও জাতির জন্য একটি মেসেজ। এ মেসেজ খুবই স্পষ্ট। ‘জনগণ’ জননেত্রী শেখ হাসিনা’র ভাষা বুঝেন। তিনিও জনগণের ভাষা বুঝেন। আর বুঝেন বলেই, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের নেতাদের, মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান এমপি,নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উপর বারবার জরিপ পরিচালানা করেছেন। বিগতদিন গুলিতে ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় এঁরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলকে কতটুকু সমৃূ্দ্ধ করেছেন, দলের তৃণমূলের আস্থা কতটুকু অর্জন করেছেন, জনগণের মনে কতটুকু স্থান করে নিয়েছেন, দলকে ব্যবহার করে নিজের উন্নয়ন কতটুকু করেছেন? এই বিষয় গুলিই জরিপের মূল বিবেচ্য বিষয় ছিল, অানুসাঙ্গিক অন্যান্য বিষয় গুলির সাথে। আবারও দলকে ক্ষমতায় নিতে হলে গ্রহনযোগ্য একটি নির্বাচনে বিজয় অর্জন করতে হবে। এর কোনই বিকল্প নেই। সে লক্ষে তিনি চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই এবার নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিবেন। সেই ক্ষেত্রে অনেকেরই ভাগ্যের দূয়ার সুপ্রষন্ন!
আবার কারো কারো বেলায় ভাগ্যদেবী রুষ্ট! জেলার পাঁচটি আসনের কোন কোনটিতে পরিবর্তনের আভাস এবার খুবই সুস্পষ্ট।
চলবে…