নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর ॥
নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ভয়ঙ্কর এক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে ১৯ মার্চ জামালপুরে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৮ মার্চ রাত ১১টায় জামালপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোয়েব হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জামাল পাশা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে (১৪) উদ্ধার এবং পালনকারী অভিভাবক ধর্ষক আয়ুব আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ১৯ মার্চ পৌরসভার কাউন্সিলর জামাল পাশা বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় আয়ুব আলীকে (৬২) আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় আয়ুব আলী ওই শিশুটিকে তিন বছর বয়সে পালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। আয়ুব আলীর বাড়ি বকশিগঞ্জ হলেও তিনি জামালপুর শহরের বানিয়াবাজার এলাকায় ভাড়াটে বাসায় বসবাস করতেন। স্ত্রী সন্তান রেখে সে এই এতিম শিশুটিকে নিয়ে এখানে রহস্যজনক কারণে অবস্থান করে আসছিলেন।
মেয়ের জবানিতে তার বয়স ১২ কি ১৩ বলে উল্লেখ করে। ভিকটিম এই প্রতিনিধিকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, গত এক বছর আগে থেকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে আয়ুব আলী তাকে নির্যাতন শুরু করে। এই বিকৃতরুচির ধর্ষক মেয়ের বক্তব্য অকপটে স্বীকার করে বলেন, আমি এই মেয়েটিকে বিয়ে করবো।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, পিতৃমাতৃহীন শিশুটিকে সুরক্ষা এবং তার আইনগত যাবতীয় সহায়তা উন্নয়ন সংঘ বহন করবে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিমুল ইসলাম মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেপ্তার আয়ুব আলীর যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় একজন মানুষ হিসেবে আমিও দাবি করি।
এই জঘন্য ঘটনার সাথে যুক্ত আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও ব্যক্তিরা জোর দাবি জানিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
উন্নয়ন সংঘের আইআইআরসিসিএল প্রকল্পের সমাজকর্মী আরজু মিয়া মামলা রজু থেকে শুরু করে চিকিৎসকের পরীক্ষাসহ আইগতভাবে সার্বক্ষণিক সংশ্লিষ্টদের সহায়তা করেন।
সর্বশেষ জানা যায়, মেয়েটিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারিক হাকিম ভিকটিমকে মামলার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেখ রাসেল প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখার এবং আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।