বিশেষ প্রতিনিধিঃ জামালপুরের ৭টি উপজেলার মধ্যে প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে কলেজে অর্নাস কোর্স চালু হলেও বকশীগঞ্জে কোন কলেজে এখন পর্যন্ত অর্নাস কোর্স চালু হয়নি, আর কবে হবে? এভাবেই সাংবাদিকদের প্রশ্ন করলেন জামালপুর আশিক মাহামুদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অর্নাস পড়–য়া এক শিক্ষার্থী। সে জানায়, জামালপুরে পড়াশোনা করায় প্রতিমাসে প্রায় ৫হাজার টাকা খরচ হয়, বকশীগঞ্জে অর্নাস কোর্স চালু হলেও অনেক শিক্ষার্থীই এলাকাতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে পারবে, বাঁচবে অর্থও।
সে আরও জানায়, জামালপুরের প্রতিটি উপজেলায় অর্নাস কোস চালু রয়েছে। যে সব বিষয়ে অর্নাস নেই তারাই শুধু জামালপুর বা অন্য কোন জায়গায় পড়াশোনা করতে যায়।
উপজেলা পর্যায়ে সর্ব প্রথম অর্নাস কোর্স চালু হয় সরিষাবাড়ীতে। সেখানে বাংলা, সমাজ বিজ্ঞান ও ব্যবসায়ী শিক্ষামহ ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে প্রায় ১ যুগ আগে।
ইসলামপুর কলেজে ২০১৬ সালে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। দেওয়ানগঞ্জ একেএম মেমোরিয়াল কলেজ ও দেওয়ানগঞ্জ কামিল মাদ্রাসাতেও অনার্স কোর্স চালু আছে। জেলার অন্যান্য উপজেলা পর্যায়ে অত্যন্ত একটি করে কলেজে অনার্র্স কোর্স চালু রয়েছে।
পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী, কলেজ অবকাঠামো ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা স্বত্বেও বকশীগঞ্জ কিয়ামত উল্লাহ কলেজে অনার্স কোর্স চালু করা হয়নি।
স্থানীয়ভাবে অর্নাস কোর্স চালু না হওয়ায় অনেক মেধাবী দারিদ্র শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডিগ্রীতে পড়া শিক্ষার্থী আবু রায়হান জানান, আমার অনার্সের পড়াশোনা করার খুবই ইচ্ছা ছিল, কিন্তু অর্থিক সংকটের কারণে জামালপুর বা অন্য জায়গায় পড়াশোনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় বিধায় বাধ্য হয়েই আমাকে ডিগ্রীতে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।
অপর শিক্ষার্থী কামাল হোসেন জানান, আমি এসএসসিতে এ প্লাস ও এইচএসসিতে রেজল্ট এ ছিল। আমার অনার্সে পড়া খুবই ইচ্ছা ছিল কিন্তু অর্থিক সংকটের কারণে আমাকে বাধ্য হয়েই ডিগ্রীতে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। আমাদের এ কলেজে অর্নাস কোর্স চালু থাকলে আমি অনার্সে পড়াশোনা করতে পারতাম।
কলেজ সুত্র জানাগেছে. বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২শত শিক্ষার্থী ও ডিগ্রী পর্যায়ে ১৫শত সহ প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে আসছে।
প্রতিবছর ভর্তির সময় নির্ধারিত আসনের চেয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থীর আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু নির্ধারিত আসনের চেয়ে ভর্তি করানো সম্ভবয় হয় না বলেও কলেজ সুত্রে জানাগেছে।
এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম জানান, একটি কলেজে অর্নাস কোর্স চালু করতে প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ৫জন শিক্ষক থাকতে হয় কিন্তু সরকারী কলেজ হওয়ায় কোন বিভাগের ২জনের বেশি শিক্ষক নেই।
অর্নাস কোর্স চালু করতে হলে প্রথমেই বিভাগ পর্যায়ে পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। সরকারী কলেজ হিসাবে পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করা জটিল হলেও রাজনৈতিক সৎইচ্ছা থাকলে মন্ত্রণালয় থেকে পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে কঠিন কিছু নয়। আর পদ বৃদ্ধি পেলে অনার্স কোর্স চালু করা খুব সহজ হয়ে যাবে।