গোলাম রাব্বানী নাদিমঃ বুধবার রাত ১১টার দিকে মোবাইলের মাধ্যমে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢুকি তখন দেখি, উপজেলা প্রশাসন বকশীগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে ৩টি ছবি দিয়ে ভিক্ষুক সাদেক আলীকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস।
কয়েকটি দিনে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান সিদ্দিকের পরপর ২টি ফেসবুক আইডিটি কে বা কারা হ্যাক করেছে। নতুন করে উপজেলা প্রশাসন বকশীগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলেছেন।এই আইডি থেকে রাত ১০টার দিকে আপলোড করা একটি স্ট্যাটাস মনোযোগ সহকারে পড়লাম। এখানে একজন ভিক্ষুককে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
প্রথম নামটি এসেছে তিনি হলেন, সাদেক আলী, বাড়ী পৌর এলাকায় সীমারপাড়ে।প্রতিদিন মসজিদে মসজিদে ভিক্ষা করতেন।কিন্তু ভিক্ষা বিরোধী কয়েকদিনের প্রচারণায় তার ভিক্ষার পরিমান কমে গেছে। ভিক্ষা করে এখন সাদেক আলী দিন চলে না।
কয়েকদিন আগে বকশীগঞ্জ উপজেলাসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের নিয়ে ভিক্ষা নিরুৎসাহিত সংক্রান্ত সভা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান সিদ্দিক।
সে কারণে ভিক্ষা কমে যাওয়ায়, ক্ষোভ বেড়েছে ইউনিও এর উপর, তাই চলে যান ইউনিও আবু হাসান সিদ্দিকির উপর।
ক্ষোভ ঝাড়তেই সাদেক আলী চলে যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট। সেখানে গিয়ে দেখেন আরেক পরিবেশ।
ভিক্ষাবৃত্তি সম্মানজনক পেশা নয় এ কথাটি সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান সিদ্দিক।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে উপস্থিত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর বকশীগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক ইউএনও এর অনুরোধে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন।
সাথে সাথে সাদেক আলীর নামে একটি বয়স্কভাতা কার্ডেরও ব্যবস্থা করে দেন ইউএনও আবু হাসান সিদ্দিক।
পরে ওই সাদেক আলীর সাথে এক সঙ্গে নাস্তাও করেন ইউএনও আবু হাসান সিদ্দিক।এভাবে ভিক্ষাবৃত্তিকে চির বিদায় জানালেন সাদেক আলী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেসবুকে স্টাটাসে সকল মানুষকে অনুরোধ করে লেখেন, একজন একজন আমরা যদি ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেই, তাহলে বিক্ষুক পুনর্বাসন প্রক্রিয়া খুব কঠিন হবে কি?
পুনশ্চঃ আমাদের নিকট আত্নীয় কেউ মারা গেলে বা অন্য কারনেও মহা সমারোহে খাওয়ার আয়োজন করা হয়। এর পরিবর্তে একজন অসহায় ভিক্ষুক এর হাতকে কর্মক্ষম হাতে পরিণত করা কী অধিক ছোয়াবের কাজ নয়?