এডভোকেট আনিসুজ্জামান আনিসঃ
আচ্ছা বলুন তো হাতি বিচরন করে কোথায় ?জানি সবাই বলবেন বনে।
তাহলে বন্য প্রানী হাতির পাল গ্রামে কেন?
বন্ধুরা,সপ্তাহ হল বেশ তোলপার।হাতি এসেছে।বকশীগঞ্জ উপজেলা,পার্শ্ববর্তী উপজেলা শ্রীবরদি,দেওয়ানগঞ্জ। জামালপুর ও শেরপুর জেলা হতে প্রতিদিন শতশত মানুষ বিনাপয়সায় হাতি দেখতে আসে। ইউ এন ও সাহেব আসে, চেয়ারম্যানের পরিষদ বর্গ, বনবিভাগের সাধু অসাধু কর্তাব্যক্তি গন আসে। হাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সামান্য কিছু অর্থ বিতরন। কেউ পেয়ে হাসে কেউ না পেয়ে কাঁদে।
হাতিরা বেশীর ভাগ আমার গ্রাম সাতানীপারা, যদুর চর ও লাউচাপরা বেশী আসে।
গত শুক্রবার দিন শেষে নিজ গ্রামে গেলাম হাতি দেখার জন্য।
দার্জিলিং এ টাইগারহিলে উঠে কানচনজংঘা দেখার জন্য সূর্য উঠার প্রতিক্ষায় যেমন থাকে পর্যটকের চোখ, তেমনি আমি ও কয়েকজন সংগি।রাত নামার সাথে সাথেই হাতির আগমন আমার গ্রামের এক পাশে।
হাতি আক্রমণের আগেই শুরু হল শতশত মানুষের আক্রমন। বর্ষা, বাঁশের ফলা, তীর,আগুনে গরম করা লোহার ফলা নিক্ষেপ করে করে হাতি গুলোকে একের পর এক আহত করছে দু পা ওয়ালারা।
মশালের আলোতে খুব কাছ থেকে দেখলাম।
এত অত্যাচারের পরও গেল না। আমার কাছে মনে হল খুব ক্ষুধার্ত হাতি গুলো।
কাছেই ক্ষুধার্ত হাতিরা বিঘা ক্ষানি জমির ধান ক্ষেয়ে ফিরে গেল। এরই মাঝে সময় পেরিয়ে গেল তিন ঘন্টার মত। আগের দিন অবশ্য পাহাড়ের কাছে ৪/৫টি ঘরের ক্ষতি করেছে।
আমার লেখার শুরুটা অসহায় হাতির শিরোনামে।
এ বন আমার কিশোর বেলার
এ বন আমার শিশু কালের
এ বন আমার শেষ বেলার।
এক সময় এ বনে ছিল বাঘ.বন বিড়াল,হরিন,বন মোরগ,বুনো শুয়োর,বানর,
হনুমান এ সব ছিল ঝাঁকে ঝাঁকে।
নানা রকম পাহাড়ী ফল ছিল।যা বিক্রি করত পাহাড়ীরা। আজ এর একটিও নাই।
পাহাড়,বন আজ মানুষের দখলে।বনে শত শত মানুষের ঘর। পাহাড় কেটে বসতি গরছে মানুষ।পাচার হচ্ছে পাহাড়ী গাছ।
উপরের পিচিচ প্রানী গুলো প্রতিবাদ করতে পারনি,পারেনি যুদ্ধ করে বাঁচতে তাই তারা শেষ।
হাতি গুলো বাঁচতে চায়।তাদের জায়গায় তাদের থাকতে দিন।তাদের বেদখল বন কে তাদের ফিরিয়ে দিন। দু পায়া মানুষের কাছ থেকে পাহাড় /বন কে রক্ষা করুন।
প্রশাসনের কর্তা গন একবার বনে গিয়ে দেখুন
হাতি গ্রামে আগে এল না মানুষ বনে আগে গেল।
বিবেক হীন মানুষ গুলোর কথাও ভাবুন,
আল্লাহর সৃষ্টি অসহায় হাতির কথাও একবার
ভাবুন।
এ দায়িত্যও আপনাদের।