দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই গোবরের তৈরি ঘুঁটে রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন গৃহিণীরা। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে এর ব্যবহার বেশি। রান্নার কাজে ব্যবহৃত এ গোবরের জ্বালানি মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।
গোবর উৎকৃষ্ট সার তা জমিতে ব্যবহার করুন। গোবরের তৈরি ঘুঁটে ব্যবহার বন্ধ করুন।ঘুঁটে ব্যবহার করে রান্না করলে চোখ অন্ধ হয় বলে মেলায় আগত দর্শণার্থীদের এ বিষয়ে অবহিত করে নমুনা প্রদর্শন করেছেন স্টলে পরিদর্শনরত কৃষিবিদরা।
এ বিষয়ে কথা হয় স্টলে পরিদর্শনরত কৃষিবিদ ড. খালেদ কামালের সঙ্গে। তিনি জানান, রান্নার সময় যখন গোবরের ঘুঁটে জ্বালানো হয়, তখন এর থেকে ধোঁয়া বের হয়। সেই ধোঁয়া সরাসরি প্রবেশ করে চোখে। চোখে লাগার সঙ্গে সঙ্গেই পানি বের হয় এবং চোখ ব্যথা করে। কারণ এ ধোঁয়াতে রয়েছে ক্ষতিকারণ মিথেন গ্যাস।
প্রতিনিয়ত গৃহিণীরা এ গোবরের তৈরি ঘুঁটে রান্নার কাজে ব্যবহার করলে একটা সময় তারা অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। গ্রামের নারীদের বৃদ্ধাকালীন সময়ের অন্ধত্বের বড় কারণ এটি- যোগ করেন এ কৃষিবিদ।
তিনি আরো জানান, এ ধোঁয়া শ্বাস-প্রশ্বাস এবং লান্সের জন্য ক্ষতিকারক। হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। এছাড়া গোবরে ক্ষতিকারক আর্সেনিক রয়েছে। ধোঁয়ার মাধ্যমে সেই আর্সেনিক মানবদেহে প্রবেশ করে। যা কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এক কথায় জ্বালানি হিসেবে গোবর ঘুঁটে ব্যবহার মোটেও উচিৎ নয় বলে মনে করছেন এ কৃষিবিদ।
ফেনী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রাফিউল ইসলাম রাসেল জানান, গোবর একটি উপকারি জৈব সার। তাই এটি জমিতে ব্যবহার করা উচিৎ। ঘুঁটে হিসেবে এর ব্যবহার মানবদেহের ক্ষতিকর।
এছাড়া গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করা যায়, যা জ্বালানি হিসেবে ভালো ভূমিকা রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভাবিত ভার্মি কমপোস্ট তৈরি করতেও গোবর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপদান। জৈব সার হিসেবে এটি জমিতে প্রয়োগ করলে ফসলের উৎপাদন কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়।তাই গোবর ব্যবহার করা উচিত জমিতে চুলায় নয়।