নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ মৌলভী বাজার জেলার ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার অসহায় দু:স্থ মানুষদের ১৫ লাখের অধিক টাকা মেরে উধাও হয়েছে। এনিয়ে সেখানে তোলপাড় চলছে। সরিষাবাড়ী পৌরসভার সামর্থবাড়ি এলাকায় ৮ শতাধিক ভুক্তভোগী সদস্যরা রোববার দুপুরে ওই এনজিওর মাঠকর্মীর বাড়ি ঘেরাও করে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। অপরদিকে সংস্থাটির সরিষাবাড়ী উপজেলার নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা গা ঢাকা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, মৌলভী বাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মৌমিতা ইসলাম তাদের সরিষাবাড়ী এলাকার কার্যালয়ের জন্য রাজিয়া সুলতানাকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেন। সংস্থাটির পৌরসভার সামর্থবাড়ি শাখায় হারুন অর রশিদ নামের একজনকে মাঠকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়। দুই কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা ও হারুন অর রশিদ যোগসাজস করে তারা সরকার অনুমোদিত ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচয়ে এলাকার গর্ভবতী, বয়স্ক ও বিধবা মহিলাদের বিভিন্ন সেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রায় ৮০০ নারীকে সদস্য করেন।
তারা ওই নারী সদস্যদের ত্রাণ হিসেবে ১০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আটা, এক কেজি লবণ, এক কেজি ডাল, দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি ও বিধবাদের পাঁচ বছর মেয়াদি বিধবাভাতা এবং প্রতিমাসে ৩ হাজার ৩০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংস্থার কার্ড দেয়। ওই নারী সদস্যরা জানান, বিধবাভাতার কার্ডধারীদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও ত্রাণের কার্ডধারীদের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়। তারা ৮ শতাধিক গর্ভবতী, বয়স্ক ও বিধবাদের কাছ থেকে আদায় করা সঞ্চয়ের ১৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছে। এরপর থেকে তারা ত্রাণের পণ্য, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা না দিয়ে পাঁচ মাস ধরে নারী সদস্যদের সাথে নানা তালবাহানা করে আসছে।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ নারী সদস্যরা রোববার দুপুরে সংস্থাটির মাঠকর্মী হারুন অর রশিদের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় হারুন অর রশিদ কৌশলে নিজেকে বাঁচাতে তিন মাসের মধ্যে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানার সাথে আলোচনা করে একটি সমঝোতার আশ্বাসের কথা উল্লেখ করে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন। লিখিত দলিলটি স্থানীয় বলারদিয়ার গ্রামের স্বপ্না বেগমের কাছে জমা রাখা হয়েছে। দু:স্থ নারীদের সহায়তার নামে সংস্থাটির প্রতারণা নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাজিয়া সুলতানা কোথায় আছে এ প্রসঙ্গে মাঠকর্মী হারুন অর রশিদের কাছে ওই নারী সদস্যরা জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ তার সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। ধারণা করা হচ্ছে রাজিয়া সুলতানার প্রলোভনে পড়ে হারুন অর রশিদ এ প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। ওই সংস্থার নারী সদস্যরা সংস্থাটির চেয়ারম্যান মৌমিতা ইসলাম, সরিষাবাড়ীর নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা ও মাঠকর্মী হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।