নারায়ন মোদকঃ ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২,ইসলামপুর আসনে মাহজাবিন খালেদ বেবী আওয়ামীলীগের আলোচিত মনোনয়ন প্রত্যাশী।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জামালপুর জেলার ৭টি উপজেলাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ৫টি আসনেই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নানান কর্মসূচিতে অংশ গ্রহনসহ করছেন নির্বাচনী প্রচারণা। এবার ঈদে এমনটি লক্ষ করা গেছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আকর্ষণীয় ডিজিটাল ব্যানার, ফেষ্টুন, পোষ্টার, বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে রাস্তা ঘাটে।
বিভিন্ন আকর্ষনীয় ডিজাইনের ডিজিটাল ব্যানার, ফেষ্টুনের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে অনেকে মনোয়ন প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা। এখন আলোচনার বিষয় হলো আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন কোন দলের কে কে প্রার্থী হবেন। খুব স্বাভাবিকভাবে ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের কর্মকান্ড নিয়ে হিসাব নিকাশ শুরু হয়েছে। তাদের নিয়ে রিকশাচালক-দিনমজুর থেকে শুরু করে চায়ের টেবিলে বসে প্রতি চুমুকে পর্যালোচনার ঝড় তুলছেন ভোটাররা। কে কতটুকু জনবান্ধব নেতা ছিল, কে কতটুকু করেছেন এলাকাবাসীর জন্য তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,জামালপুর-২,ইসলামপুর আসনে এবার আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন বর্তমান এমপি আলহ্জ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল, জামালপুরের সংরিক্ষত আসনের মহিলা এমপি মাহজাবিন খালেদ বেবী,জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা ও ঢাকা বিমান বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান আলী মন্ডল। তবে এবার উন্নয়ন কর্মকান্ডে বৈষম্যসহ দলীয় কোন্দলের জন্য আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পাওয়ার একধাপ এগিয়ে রয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ২নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও কে র্ফোসের অধিনায়ক শহীদ খালেদ মোশাররের কন্যা মাহজাবিন খালেদ বেবী।কেননা তিনি সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার পর তার নিজ এলাকা ইসলামপুরে নৌকার হাল ধরতে নিরলস ভাবে উঠান বৈঠকসহ নানান উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছেন।
এছাড়াও যে সকল রাজনীতিক গুনাবলির করণে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামালপুর-২আসনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার একমাত্র যোগ্য এবং দাবিদার ব্যক্তি মাহজাবিন খালেদ(বেবি) মোশারফ। মাহজাবিন খালেদ বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সদস্য হিসাবে জাতীয় সংসদের ৩১৮জামালপুর-১৮ সংরক্ষিত আসনে একজন সংসদ সদস্য।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে প্রথম মিছিলটি করেন এই পরিবার। বাবা মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ ১৯৭৫ সালে ৭ নবেম্বর নিহত হন। খালেদ মোশারফ ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ২নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও কে র্ফোসের অধিনায়ক। মা সালমা খালেদ একজন গৃহিণী ও লেখক। স্বাধীনতাযুদ্ধে খালেদ মোশারফের অবদান কোন কালেই ভুলবার নয়।
চাচা রাশেদ মোশারফও রাজনীতির সাথে জরিত ছিলেন। তিনি জামালপুর-২,ইসলামপুর আসনে ছয় ছয় বারের এমপি। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সূত্রে মাহজাবিন খালেদ রাজনীতির সাথে জড়িয়েছেন মানুষের কল্যাণের জন্য।
জামালপুর জেলা ইসলামপুর উপজেলার পৌর এলাকার মোশারফগঞ্জ গ্রামে জম্ম গ্রহণকারী আলোকিত ওই মানুষটির ডাক নাম বেবি। কাগজ কলমে মাহজাবিন খালেদ। তবে এলাকায় বেবি মোশারফ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত।
জানাযায়, মাহজাবিন খালেদ জম্ম গ্রহণ করেন ১৯৬৬ সালের ১৬ডিসেম্বর। ১৯৮৩ সালে হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করেন। একই কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন ১৯৮৫ সালে। এরপর, ১৯৮৯ সালে ভারতের দার্জিলিংয়ে অবস্থিত ওয়েষ্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটির লরেটো কলেজ থেকে জিওগ্রাফিতে বিএ পাশ করেন।
পার্লামেন্টারি ষ্ট্যান্ডিং কমিটির ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্সের মেম্বার হিসাবে তিনি দেশের কূটনৈতিক দক্ষতা বাড়াতে ইতিমধ্যে ডেলিগেট টিমের সাথে বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসাবে ও বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধের প্রসঙ্গে বৈশ্বিক সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করছেন মাহজাবিন খালেদ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে বাংলাদেশি ডেলিগেটদের অংশ হিসাবে চাইল্ড রাইটস ককাস ও ক্লাইমেট পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এর আগে,কর্মজীবনে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করার সুবাদে তিনি জাতীয় স্বার্থে সমকালীন বিষয়াদি, আইনের শাসন,মানবাধিকার, ইকোনমি,ইন্টারফেইথ ইস্যুজ এবং প্রতিবন্ধী মানুষদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার থেকেছেন।
মাহজাবিন খালেদ এম পি হওয়ার পর থেকে ইসলামপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ যমুনার পশ্চিম পাড়ে দুর্গম চরে বাল্যবিবাহ রোধ ও জঙ্গি বিরোধী আলোচনা সভা করে আসছে নিয়মিত। নিয়মিত করেই চলছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকও।
নিজ দল আওয়ামী লীগকে সু-সংগঠিত করতে বিভিন্ন সময় বক্তব্যে বলেন, নৌকা শান্তি দেবে, নৌকা উন্নতি এনে দিবে, নৌকা সমৃদ্ধি দেবে, নৌকা বাংলাদেশের মুক্তি এনে দিবে, আগামী নির্বাচনে সকল মতভেদ ভুলে নৌকা ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন।
মাহজাবিন খালেদ সংসদ সদস্যের বাইরে সেবামূলক সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ২০১৬ সালের ১৫ আগষ্ট শহিদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ(বীরউত্তম) স্মৃতি পরিষদ ব্লাড ব্যাংকের উদ্বোধন করেন তিনি। পৌর শহর নিজ ভবনে ব্লাড ব্যাংকের উদ্বোবন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা ক্যাম্পেইনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাথী ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নিয়ে তাদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করান।দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বখ্যাত ইসলামপুরের কাঁশাশিল্পকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্ত থেকে উদ্ধার করতে তার ঐচ্ছিক তহবিল থেকে প্রথম বারের মত আর্থিক সহযোগিতা করে ঐতিহ্যবাহী ওই কাঁশাশিল্পকে পূনরুদ্ধা করেন। তার বরাদ্ধকৃত টিআর কাবিটা সোলার প্যানেল গ্রামীন জনপদে লেখেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। বাস্তবিক পক্ষেই তিনি একজন ব্যতিক্রম জনসেবিকা। তাঁর মতো অভিজ্ঞ,সৎ,ও নিষ্টাবান জনসেবিকা-রাজনীনৈতিক বিরল। তাই আসন্ন আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২,ইসলামপুর আসনের নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন পেলে ইসলামপুরে আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল নিরসন সহ ইসলামপুরে শিক্ষা,স্বাস্থ্য,বাসস্থান,নদী ভাঙ্গা মানুষের দুঃখ লাঘব সহ রাস্তা-ঘাট ব্রিজ কালভাটসহ গ্রামীন জনপদে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে এলাকাবাসী প্রত্যাশা।
সে কারণে নৌকার মাঝি হিসাবে বেবীকে দেখতে চায় ইসলামপুরবাসী।